কুকুরের কান্না

একটি ভাল কুকুর কোনদিন কুকাজ করা না দেখলে তাড়া করে না আর কামড় দিতেও আসে না।কুকুরকে প্রভু ভক্ত প্রানি বলা হয়। প্রত্যেকটি কুকুরই মানুষের ভক্ত হয়ে থাকে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে যে কুকুরকে আমি চিনাতাম অথবা জানতাম তার কথাই এখন আমি লিখতে যাচ্ছি,,, কুকুরের নাম ছিল কাল্লো, কাল্লো বললে কুকুরটি তার মন থেকে লেজ নাড়িয়ে ভালবাসা দেখাতো যেকোন মানষের প্রতি। এই কুকুরের প্রতি আমরা এত বিশ্বস্ত ছিলাম যে বাড়িতে এই কাল্লোকে রেখে গেলে নিশ্চিন্তে যেকোন জায়গাতে কাটানো যেত।কুকুরটির এত ভালবাসা ছিল অন্যকেউ না দেখলে বিশ্বাস করানো হইতো সম্ভব হয়ে উঠবে না। কাল্লোর কয়েকটি গুনও আছে,, কাল্লো অনেক অনেক সাহসী, মানূষের প্রতি ভক্তি,কেঊ আসলে লেজ নারিয়ে কাউকে জিজ্ঞাসা করা, তার চোখে যে জিনিস অন্যায় মনে হয় সেট তার মুখের ভাব-ভঙ্গির মাধ্যমে প্রকাশ করতে পাড়া।এমন একটি কুকুর সাথে থাকলে যেকোন জাগাতেই নিরাপদ লাগে। কাল্লো কুকুরটা মেয়ে কুকুর ছিল, কুকুরের কয়েকটা মাস আছে যেখানে তারাও মানুষের মত বাচ্চা জন্ম দান করে।কাল্লোও তেমনি একটা মাসে গর্ভবতী হয়ে যাই। কিন্তু আগের মতই হাসিখুশি থাকতো বুঝা কিছুটা কঠিন ছিল সে যে গর্ভবতী। কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ করা ভমি করা দেখা যেত। এরকম করেই কয়েকদিন যাওয়ার পর কাল্লোকে আর খুজেই পাওয়া যাচ্ছিলনা।আমাদের বাড়িতে একটি অপরিত্যক্ত রান্না ঘর ছিল যেখানে এখন রান্নাও হয় না ঘরটাও একটু ভাঙ্গা ছিল। সেই রান্না ঘরের একটা ঘরের কোনাই কাল্লো তার বাচ্চা প্রসব করে। কাল্লো কে ৩ দিন হয় খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না দেখাও যাই না কোথাও, ৩ দিন পর কাল্লো উঠানে লেজ নারিয়ে হাস্যোজ্জ্বল ডাক দেয়, মনে হই খুব খিদে লেগেছিল। কাল্লোকে এক প্লেট ভাত দেওয়া হই।ক্ষুধার্ত কাল্লো খুব তারাতারি করে খেয়ে নেই।
তার এই হৃদয়বিদারক কষ্ট মানুষের পায়ের কাছে এসে প্রকাশ করত,মানুষ দেখলে চিৎকার করে কান্না করত কিন্তু তার এত দুঃখ আর এত কষ্ট আমাদের বুঝেও কিছু করার ছিল না।তাকে খাবার দিলেও একটু কাছে গিয়ে গন্ধ নেওয়া ছারা একটুকু খেত না। কাল্লোর এই হৃদয় ভাঙ্গা কষ্ট তাকে মৃত্যর দিকে নিয়ে যাই না খেয়ে আত্নহত্যা করার মত অবস্থা। তার কষ্ট দুর করার জন্য প্রতিবেশির বাড়ি থেকে কুকুরের একটি ছানা তার জন্য নিয়ে আসি। কাল্লো খুব ভাল ছানা/ বাচ্চাটির কিছুই করেনি বরং তার দুধ খাওয়াতো কিন্তু সে নিজে কিছুই খেত না।বাচ্চা দেওয়ার পরও তার কান্না থামে নি।মানুষের কাছে আসলেই তার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসত।কাল্লোর তার বাচ্চাদের প্রতি পরম ভালবাসা আমাদের আশ্চর্য করে তার কান্নাই।সে ভুলতে পারেনা তার বাচ্চার মৃত্যু। সে শুধু সারাদিন কান্না আর কান্না করতেই থাকতো....................................

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

সফল হওয়ার জন্য যা দরকার

নার্সিং ভবিষ্যত