একদিনে চন্দ্রনাথ পাহাড় আর খৈয়াছড়া ঝড়ণা ভ্রমনের সহভাগিতা

 পুনরায় স্মৃতিচারণ একদিনে চন্দ্রনাথ পাহাড় আর খৈয়াছড়া ঝড়ণা। আমাদের খরচ ছিল জনপ্রতি ১৫০০ টাকার মত! বর্তমানে ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম আলোচিত জায়গার একটি চন্দ্রনাথ পাহাড়। তার থেকে ৩০-৪০ মিনিটের দূরত্বে খৈয়াছড়া ঝড়ণা। আমি ৭-৭-২০১৮ইং তারিখে গিয়েছিলাম! চন্দ্রনাথ যাত্রাঃ আমরা গিয়েছিলাম ৫ জন। যাত্রাশুরু হয় মিরপুর ১২থেকে। রাত ১১:১৫ এর বাস টিকেট ৪৮০ টাকা জন প্রতি টিকেক কেটে নিই ঢাকা থেকে সীতাকুন্ডের। কমলাপুর থেকেও রেল দিয় যাওয়া যায় জন প্রতি ১২০ টাকা তবে সিট পাওয়ার জন্য বেশ বেগ হবে। সকাল টিক ৬:০০টায় পৌছে যাই সীতাকুন্ড স্টেশনে। বাস থেকে নেমে আমরা সীতাকুন্ড বাজারে যাই। সেখান থেকে নাস্তা করে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে সিএনজিতে করে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকি মন্দিরে ঘেরা রাস্তা দিয়ে। সিএনজি থেকে নেমে ১০ টাকা ভাড়ায় বাঁশ নিয়ে যাত্রা শুরু করি ১২০০ ফুট উচ্চতার চন্দ্রনাথ পাহাড়ে। পাহাড়ে ওঠার আগে অবশ্যই ১ লিটার পানি, স্যালাইন, আর শুকনো খাবার প্রত্যেকের ব্যাগে রাখবেন, উপরে খাবারের দাম ডাবল। কিছুক্ষণ ওপরে ওঠার পর দেখা যায় ছোট্ট একটি ঝড়ণা, ঝড়ণার পর দুই দিকে #দুটো_রাস্তা! হাতের ডান পাশে দেখা যযায় সিঁড়ি আর বাম পাশে মাটির রাস্তা। ট্রেকিং এর জন্য অবশ্যই হাতের বাম পাশের রাস্তা দিয়ে উঠা ভাল, এতে প্রচুর দৃশ্যও উপভোগ করা যায়। আর নামার সময় বাম পাশের সিঁড়ি দিয়ে নামা। উপরে ওঠার সময় বুঝা যায় বাঁশের গুরুত্ব। পাহাড়ে উঠতে আমাদের সময় লাগে ২ ঘন্টা মত। দিনটা ছিল হালকা বৃষ্টির। মেঘলা দিন পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার ছিল বলেই আশা করি। উপড়ে উঠে যে দৃশ্য দেখতে পাই তা ক্যামেরায় দেখানো সম্ভব না। বার বার বাতাসের মেঘ এসে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছিলো আমাদের। বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে অপর প্রান্ত দিয়ে নামা শুরু করি। ২০০০ খাড়া সিঁড়ি বেয়ে আস্তে আস্তে নিচে নেমে আসি। সেখান থেকে সিএনজিতে করে ২০ টাকা ভাড়ায় আবার চলে আসি সীতাকুন্ড বাজারে। চন্দ্রনাথ বিজয়ের পর এবারের যাত্রা খৈয়াছড়া ঝড়ণা। দুপুরের খাবার টা সীতাকুন্ডেই সেরে নেই !তবে এখানে না করাটাই শ্রেয়।
খৈয়াছড়া যাত্রাঃ চন্দ্রনাথ ঘুরে অনেকেই #ইকো_পার্ক বা, #গুলিয়াখালী সি বিচে যায়। তবে আমার মতে খৈয়াছড়া টা বেস্ট। ট্রেকিং লাভার হলে তো অবশ্যই! সীতাকুন্ড বাজার থেকে মিরসরাই গামী বাসে উঠি জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় নেমে যায় মিরসরাই। হেল্পারকে বলে রাখি খৈয়াছড়া ঝড়ণার দিকে যাবো, তসে জায়গা মত নামিয়ে দেয় । নতুবা মিরসরাই বাজারে নিয়ে গেলে আবার উলটো পথে আসা লাগবে। রাস্তা পার হয়ে চিকন রাস্তার মাথা দেখা যায় ঝড়ণার রাস্তার নির্দেশনা সাইনবোর্ডে। সেখান থেকে সিএনজি তে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছে যাই খৈয়াছড়ার পয়েন্টে। সিএনজি থেকে নেমে হাতের ডান পাশ থেকে ২০টাকা করে জন প্রতি বাশঁ নেই। যাওয়া মাঝপথে খাবার হোটেলেই ব্যাগ, জুতা ইত্যাদি রাখি। অনেকে হোটেল থেকেই ১০ টাকা জোড়া ফুটবল খেলার এঙ্গলেট ভাড়া করে নেয় যদিও আমরা নেই নি নিলে ভাল হয় ট্রেকিং এর জন্য সুবিধা । ক্যামেরা সানগ্লাস বস্তুগুলো নিয়ে যাত্রা শুরু করি। হালকা বৃষ্টির দিন হওয়ায় বেশ কাদা পাড়াতে হয়। কিছুক্ষণ পর পর ই পাথড়ে ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ণার স্রোতধারা বা, ঝিড়ি পথ অনুসরণ করা লাগে, পাড় হতে হয় বেশ কয়েকবার। আমাদের পাচঁজনের কাউকেউ জোক ধরেনি কৈয়াছরিতে তবে চন্দ্রনাথ পাহাড় একজনকে ধরেছিল । জোকের ভয় তেমন নেই বললেই চলে। বাঁশের প্রয়োজন আরো একবার অনুভব করা যায়। ট্রেকিং এর সময় বিভিন্ন গভীর খাত গুলো থেকে সতর্ক থাকতে হয়। সামান্য ভুলেই প্রাণনাশের আশংকা থাকে। আধঘন্টা সময়ের ব্যবধানে পৌঁছে যাই চোখ জুড়ানো খৈয়াছড়া ঝড়ণায়। ১১ টি ধাপের এই ঝড়ণায় খুব বেশি সাহস না থাকলে এই ঝড়ণা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকা ভাল। আর ট্রেকিং নেশা থাকলে ঝড়ণার বাম পাশের প্রায় ৯০ ডিগ্রি পথটি অনুসরণ করে উপরে উঠতে থহয়। বাঁশের ব্যবহার এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আর ট্যুর গাইডের নির্দেশনাও। একটু পা পিছলে গেলে অনেক বড় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। রোমাঞ্চকর উত্তেজনা মন টা আনন্দে ভরে যাচ্ছিলো বার বার। দেখতে দেখতে কিভাবে কেটে গেল দেড় ঘন্টা। তারপর আবার পাথর, স্রোত আর কাদার মধ্য দিয়ে ফিরে আসি ভাতের হোটেলে। সেখানে আবার একবারের জন্য রাতের খাবার সেরে নেই।তারপর সেখান থেকে সিএনজি তে করে মেইন রোডে ফিরে আসি।মেইন রোডের মাঝখানে অনেকখানি জায়গা ফাকা। দুই পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করে।সেখানে কিছু সময়ের জন্য রেস্ট নেই প্রায় ১ ঘন্টা।জিনিস পত্র গুছিয়ে বিকেল ৭ টার আগেই ফিরে আসি মিরসরাই। । এবার ফেরার পালা। যদি চন্দ্রনাথ আর খৈয়াছড়ার পর আপনার আরো এনার্জি অবশিষ্ট থাকে তাহলে ঘুরে আসতে পারেন ইকো পার্ক বা, গুলিয়াখালী সি বিচ। মিরসরাই থেকে ফেনী কাছে চট্টগ্রামের চাইতে। ট্রেনে ফিরতে হলে ফেনী চলে যেতে হবে। তূর্ণা এক্সপ্রেস রাত ১২ টা নাগাদ ফেনী তে থাকে।। ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসে ফেরাটাই ভালো। মিরসরাই বাজার থেকে জনপ্রতি ৩৫০ টাকায় শ্যামলী পরিবহনের টিকেট কেটে নেই। রাত ১১.টায় টিকেট কাটি আমরা। সকালে আসার জন্য। ১১টার আগেও বাসের টিকেট পাওয়া যায়। সকাল ৬টার আগেই আমরা ঢাকা পৌছে যাই।এত কম টাকায় এমন ট্যুর কল্পনার বাইরে ছিল। বিঃদ্রঃ যদি আপনারাও যান পাহাড়ে উঠতে বা, ঝড়ণায় ট্রেকিং এর সময় বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের প্যাকেট আর বোতল দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের দেশের সুন্দর জায়গা গুলো আমরাই নষ্ট করি, তারপর এই দেশকেই গালি দিই। আপনার দেশ পরিষ্কার রাখা আপনার দায়িত্ব। দয়া করে কোন ভাবেই জায়গা গুলো নষ্ট করবেন না।

Comments

Popular posts from this blog

রক্ত দানের উপকারিতা কি কি?

নার্সিং ভবিষ্যত

Best app to make money by your phone 2020 || 100% true... কিভাবে মোবাইল ...