দশ বছর পর আবার সেই গজনি অবকাশ দেখা


গজনী অবকাশ ভ্রমণপিয়াসুদের জন্য অন্যতম একটা স্থান।ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে তত্কালীন শেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শেরপুর জেলা সদর থেকে ২৮ এবং ঝিনাইগাতি উপজেলা সদর থেকে আট কিলোমিটার উত্তরে কাংশা ইউনিয়নের গজনি পাহাড়ের প্রায় ৯০ একর পাহাড়ি টিলায় ‘গজনি অবকাশ কেন্দ্র’ নামে একটি পিকনিক স্পট গড়ে তোলা হয়।
এ অবকাশ কেন্দ্রে দেশের প্রায় সব জেলা-উপজেলা থেকেই ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমায়।অনেক বছর আগে গজনী অবকাশে একবার যাওয়া হয়েছিল আবার সেই দশটি বছর পর আমার গজনি অবকাশে যাওয়া। গত দশ বছর আগে যখন গজনী অবকাশে যাওয়া হয়েছিল সময়টা ঠিক মনে নেই কিন্তু ২০০৮ অথবা ২০০৯ হবে। তখন খুব ছোট ছিলাম এতটা অনুভুতিশীল ছিলাম না। পরিবেশের সৌন্দর্য তেমন উপভোগ করার সামর্থ্য ছিল না।সেই সময়ের কথা যেটুকু মনে আছে এবং সেই সাথে এখনখার গজনী অবকাশ একটু সহভাগিতা করছি।২০০৮/২০০৯ যখন গজনী অবকাশে যাওয়া হয়েছিল তখন এত কিছুর স্থাপত্য ছিল না তবে দেখার মত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছিল।প্রাকৃতিক অরণ্যের সৌন্দর্য সবার মনটা যেন কেড়ে নেয় আর যদি ওয়াচ টাওয়ারে উঠে ভারতের দিকে তাকানো হয় গাছগাছালিতে ভরা  দৃশ্যতে যেন প্রাণ জুরিয়ে যায়। উচু নিচু পাহাড়ে ঘেরা এই গজনী অবকাশ ভ্রমণপিয়াসুদের মনে জায়গা করে নিয়েছে।গত ১০ বছর আগে গজনী অবকাশে যা দেখা হয়েছে তখন তুলনামূলক ভাবে এত কিছু ছিল না এখন যেমনটা দেখার অনেক কিছু আছে কিন্তু কমে যাচ্ছে প্রাকৃতিক   সৌন্দর্য যদিও কৃত্রিম দিক দিয়ে সৌন্দর্য কমে নি।গজনী অবকাশের প্রধান আকর্ষণ লেকপাড় তথা কৃত্রিম দ্বীপটি পাহাড়ি ঢলে বিধ্বস্ত হওয়ায় এর আগে যারা এসেছে তাদের মন কিছুটা খারাপ হলেও অন্যান্য সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা ঘুরে আনন্দ পাবে।দশ বছর আগে গজনী অবকাশে চিরিয়াখানা ছিল তবে উন্মুক্ত ছিল যার জন্য টিকেট কাটতে হত না।পূর্বের যাওয়া অভিজ্ঞতা থেকে যা বুঝেছি প্রাকৃতিক  দৃশ্যটাই গজনীর আসল আকর্ষণ এবং সৌন্দর্য  ছিল যা এখন আর খুজে পাওয়া যায় না তবে কৃত্রিম দিক দিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে।গাছগাছালিও এখন অনেকাংশে কম।বর্তমানে গজনীতে যা দেখা যায় তা ড্রাগন, ঝুলন্ত ব্রিজ, ময়ুরপঙ্খী নাও, পাহাড়, টিলা, পদ্মসিঁড়ি, কফি হাউজ,কৃত্রিম ঝর্না,মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ, শিশুপার্ক, মিনি চিড়িয়াখানা, মত্স্যকুমারী, শত বছরের বটগাছ। এখানে পাতালপুরী নামে একটা গুহা আছে। গুহাটা খুবই আকর্ষণীয়। তাছাড়া 'গারো মা ভিলেজ'  আছে যা প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো উপভোগ করা যায়। গারো মা ভিলেজটাতে ছোটদের জন্য আকর্ষণীয় কিছু জিনিস আছে যা তাদের মনকে কেড়ে নেয় যেমন অনেকগুলো খেলনা, মুটো-পাটলোর একটি ভাস্কর্য আরও অনেক কিছু  ।গারো মা ভিলেজটি অনেকগুলো ভাস্কর্য  দিয়ে সাজানো হয়েছে যা ছোটদের মন কেড়ে নেই এবং ছবি তোলার জন্য জায়গাটা চমৎকার।  আরও অনেক কিছুই দেখার আছে যা উপভোগ করা যাবে। 
গারো মা ভাস্কর্য 

 গজনী অবকাশ পিকনিক স্পট হওয়ার পূর্ব থেকেই আদিবাসীরা সেই জায়গায় বাস করত।বর্তমানে অবকাশের উত্তর এবং পশ্চিম পাশে এই বিচিত্র জীবন-জীবিকার মানুষ আদিবাসী গারো-কোচ-হাজংসহ ছয় সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করে।গজনী অবকাশে দেখার এবং শিক্ষনীয় অনেক কিছুই আছে যা সব বয়সীদের জন্যই উপভোগ্য একটা স্থান। বর্তমানে সব কিছুরই সুবিধা সেখানে পাওয়া যায় শুধু থাকার জন্য তেমন কোন হোটেল নেই। গজনী অবকাশের সৌন্দর্য রক্ষা করা সবারই উচিত তাই যেখানে সেখানে প্লাস্টিক দ্রব্য অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় জিনিস না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেললে পরিবেশটা আরও বেশি সুন্দর হবে।পরিষ্কার করতে না পারি অপরিষ্কার যেন না করি সেটাই কাম্য হওয়া উচিত।যত লেখি তত লেখা বেড়ে যায় তবুও ছোট করে লিখলাম। পড়ার জন্য ধন্যবাদ...💓

Comments

Popular posts from this blog

সফল হওয়ার জন্য যা দরকার

নার্সিং ভবিষ্যত